×
Loading...

আমার একাত্তর - আনিসুজ্জামান by আনিসুজ্জামান

Book Information

Titleআমার একাত্তর - আনিসুজ্জামান
Creatorআনিসুজ্জামান
PPI600
Languageben
Mediatypetexts
SubjectMeAT-lwb
Collectionbooksbylanguage_bengali, booksbylanguage
Uploaderbdhistorylibrary
Identifieramar-ekattor-anisuzzaman
Telegram icon Share on Telegram
Download Now

Description

আমার একাত্তরআনিসুজ্জামানসাহিত্য প্রকাশ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের গৌরবোজ্জ্বল মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে প্রকাশিত হয়েছে অনেক বই, বেরিয়েছে নানাজনের নানামাত্রিক স্মৃতিকথা। এ ধারায় ধীমান অধ্যাপক, নিষ্ঠ গবেষক বাঙালি মননের উজ্জ্বল প্রতিনিধি আনিসুজ্জামানের আমার একাত্তর (১৯৯৭) স্মৃতিকথা নানা কারণেই বিশিষ্টতা দাবি করতে পারে। মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক ছিলেন অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। তিনি ছিলেন প্রবাসী সরকার-গঠিত প্ল্যানিং সেলের সদস্য। প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীনের অধিকাংশ ভাষণের লেখক ছিলেন তিনি। তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারী বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। ভাবতে বিস্ময় লাগে, এসব কাজ তিনি যখন করেছেন, একটি বিপ্লবী সরকার যখন তাঁর ওপর এসব গুরুদায়িত্ব বহনের ক্ষমতা সম্পর্কে আস্থা স্থাপন করেছে, তখন তাঁর বয়স ছিল মাত্র ৩৪ বছর। রাজনীতির সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত না থেকেও আনিসুজ্জামান সেদিন যে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার পরিচয় দিয়েছিলেন, রাজনীতির খুঁটিনাটি চাল সম্পর্কে যে বিশ্লেষণ উপস্থাপন করেছেন, তা অনেকের কাছেই শিক্ষণীয় হতে পারে। আনিসুজ্জামানের ব্যক্তি-অভিজ্ঞতা ও একাত্তরের রাষ্ট্রীয় ঘটনা ধারা আলোচ্য গ্রন্থে একাকার হয়ে গেছে। অন্তিমে ব্যক্তি তাঁর কাছে গৌণ হয়ে গেছে, মুখ্য হয়েছে রাষ্ট্র। স্মৃতিকথা বলার সময় নিজেকে উহ্য রাখার প্রায় অসম্ভব এক ক্ষমতা আছে আনিসুজ্জামানের। এ গ্রন্থেও এর পরিচয় পাওয়া যায়। তিনি মুক্তিযুদ্ধের মূল ঘটনা ধারা দেখেছেন ও বিশ্লেষণ করেছেন ঘটনার কেন্দ্রে থেকে, গাল-গল্প করে নিজেকে জাহির করে নয়, বরং উহ্য রেখে। মুক্তিযুদ্ধের সময় আওয়ামী লীগের অভ্যন্তর দ্বন্দ্ব, বিশেষত তাজউদ্দীনের বিরুদ্ধ পক্ষের নানা প্রয়াস আনিসুজ্জামানের ভাষ্য থেকে লাভ করা যায়। ঘরে-বাইরে তাজউদ্দীন যে কতভাবে বিরোধিতার মুখোমুখি হয়েছেন, এ রচনায় তার আভাস স্পষ্ট। তাহেরউদ্দিন ঠাকুর, খন্দকার মোশতাক আহমেদরা যে মুক্তিযুদ্ধের সময়েই নানামাত্রিক স্যাবোটাজ করেছেন, তারও ইঙ্গিত পাই আলোচ্য গ্রন্থে। সর্বদলীয় জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের প্রতি আওয়ামী লীগ যে সুপ্রসন্ন ছিল না, বরং তারা যে চাইত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বেই মুক্তিসংগ্রাম সংগঠিত হবে—এমন ভাবনারও পরিচয় আছে আলোচ্য গ্রন্থে। আনিসুজ্জামানের বক্ষ্যমাণ গ্রন্থ থেকে মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা সম্পর্কে একটা পূর্ণাঙ্গ ধারণা পাওয়া যায়। যুদ্ধের সময় ভারতসহ বিদেশের কোনো ব্যক্তি বা সংস্থা আমাদের পক্ষে কাজ করেছে, কারা বিরোধিতা করেছে, এর স্পষ্ট ভাষ্য আছে এ গ্রন্থে। ইউরোপ-আমেরিকার অনেক ব্যক্তি ও সংস্থার সাহায্য-সহযোগের কথাও এখানে পাওয়া যায়। আনিসুজ্জামানের আন্তর্জাতিক সংযোগ যে কত ব্যাপক, এ বই তারও কিছু সাক্ষ্য বহন করে। স্মৃতিকথা বলতে বলতে, চট্টগ্রাম-রামগড়-আগড়তলা-কলকাতার কথা জানাতে জানাতে আনিসুজ্জামান নানা খণ্ডকথার মধ্য দিয়ে যেভাবে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস তুলে ধরেছেন, এক কথায় তা অসাধারণ। অনুপম এক ভাষায় অন্তরঙ্গ ভঙ্গিতে ব্যক্তিগত অবলোকনের যে চিত্র আনিসুজ্জামান তুলে ধরেছেন, তা হয়ে উঠেছে আমাদের জাতীয় মুক্তিসংগ্রামের অনুপম এক দলিল।